ফেসবুকে দেখি সেজেছে সবাই সাধু
করোনা নিয়ে ব্যবসা কারা করে প্রভু!
জান্নাতে হুরপরীরা খাওয়াবে ফল ফুল
সে লোভে অনেকে হয়েছে ব্যাকুল,
ধর্মের বাণী ছড়াছড়িতে মেসেঞ্জার হয় ভার
শেয়ার করলে জান্নাত নাকি হবে আমার।
সেলিব্রেটি হতেই হবে মনে বাসনা
ভাইরাল করতে নিজেকে বাকি কিছুই রাখেনা,
চিন্তা চেতনা কতো সুন্দর
নাই চরিত্র ভেতরে বান্দর।
নাস্তিক ভণ্ড বলে দেয় একে অপরকে ফতোয়া
ধার্মিকদের মুখে শোনা যায় অন্যের সমালোচনা।
মন্দিরের নয়নমণি হয়েছে আজ যারা
ইশ্বরকে বিক্রি করে খাচ্ছে তারা।
নারী ধর্ষণ, শিশু নির্যাতন আজও হয়নি বন্ধ
জ্ঞানের ছড়াছড়িতে জাতি হয়েছে অন্ধ।
টাইমলাইনে উপদেশ দিতে ব্যস্ত মূর্খের দল
যার নাই চরিত্র তার কিসের ধর্ম!
করোনাকে সত্যিই যদি ভয় করতো
জিনিসের দাম তবে কী বাড়তো,
মৃত্যুকে করে না ভয় লোভী অর্থে
জাতি একে অপরকে মারে নিজ স্বার্থে।
প্রভু উদ্ধার করো তুমি কঠিন বিপদে
জানিনা এর শেষ কী! মঙ্গল করো সবারে।
-২
ঘরেতে থাকো ঘরেতে থাকো ঘরেতে বাঁচো
যার নাই ঘরবাড়ি তারে কোথায় রাখো?
একদিন কাজ না করলে যার জুটে না ভাত
সে কি মানে করোনা টরোনা ধর্ম জাত।
ছিঁড়বো গলার মালা মারবো মুখে তালা
পেটে ক্ষুধার জ্বালা, জ্ঞান দাও শালা।
যে দেশেতে বিশ টাকা হয়ে যায় দশ টাকা
নিচ তলাতে এসে
সাড়ে সাত কোটি বাঙালির
সাড়ে সাত কোটি কম্বল ‘নেতা পায়নি নিজে’।
তুমি সে দেশেতে স্বপ্ন দেখো
কানাডার মত আমাদেরও নেবে দায়িত্ব!
দূর্নীতি যাদের রক্তে মেশা প্রমাণিত বহুবার
ঘর করেছে আড়ত, মজুদ হয়েছে খাবার।
ঘরেতে থাকো ঘরেতে থাকো ঘরেতে বাঁচো
যার নাই ঘরবাড়ি তারে কোথায় রাখো?
সচেতন সচেতন বলে করে যাও চিৎকার
অসচেতনায় তোমরা
শুধু অর্থে নয় স্বভাবে তোমাদের অভাব,
চোরে মানে না ধর্মের বাণী
কারে বলি আমি এই কাহিনী।
-৩
মতিঝিল থেকে আসার পথে
দেখলাম আইডিয়ালের মোড়ে
পুলিশ ফাঁড়ি ঘেঁষে
শুয়ে আছে এক ব্যক্তি পথের ধারে,
আসলাম যখন বিজয় স্মরণীর মোড়ে
ছোট্ট একটি মিষ্টি মেয়ে জামা টেনে ধরে
ভাইয়া ফুল নেবেন ফুল? টাকা দরকার ঘরে
অনাহারে কাটছে দিন খাবারের অভাবে,
এর পরে আসলাম যখন ষাট ফিটের মোড়ে
দেখলাম সেখানে অনেক মানুষে
ধুলোবালি গায়ে জীবন যুদ্ধে লড়ে।
বিশ্ব যখন করোনা করোনা বলে কাঁপছে ডরে
তখন আমি চিন্তিত এই মানুষের তরে।
বাংলাতে নেই বিল গেটস
নেই কানাডার মত রাষ্ট্রনায়ক
আছে তবে এই বাংলায়
প্রভাবশালী টাকাওয়ালা এসি গাড়িতে চড়ে,
চাইলে তারা করতে পারে
এই দেশ ক্ষুধা-দারিদ্র্য মুক্ত ওরে।
মনেপ্রাণে আমি বিশ্বাস করি
মানুষের মাঝে ইশ্বর থাকে।
সত্যিই আমি এই মানুষের চরণে
পূজা দিতাম মন ভরে,
যদি হাত মুখের সাথে
নিজেদের মনটাও ধুতো করোনার ভয়ে।
-৪
বিশ্ব যখন করোনা করোনা বলে কাঁপছে ডরে
তখন আমি চিন্তিত এই মানুষের তরে।
এই মানুষেরে করি ঘৃণা এই মানুষেরে বাসি ভালো
এই মানুষে দেখি খারাপ এই মানুষে দেখি আলো
এই মানুষের কাছে আসি এই মানুষকে ভালোবাসি
এই মানুষে দেখি ভালো এই মানুষে দেখি কালো
এই মানুষের সাথে মিশি এই মানুষের মাঝে ইশ্বর খুঁজি,
মনেপ্রাণে আমি বিশ্বাস করি
মানুষের মাঝে ইশ্বর থাকে।
এই মানুষকে ভালোবাসি
মানুষের দেয়া ঘৃণা আর অবহেলা বুকে নিয়ে বাঁচি
বারবার আমি এই মানুষের কাছে আসি।
ঘরেতে থাকো ঘরেতে থাকো ঘরেতে বাঁচো
যার নাই ঘরবাড়ি তারে কোথায় রাখো?
একদিন কাজ না করলে যার জুটে না ভাত
সে কি মানে করোনা টরোনা ধর্ম জাত।
নিঃস্বার্থে করোনা প্রতিরোধে নিরলস কাজ করছে যারা
শ্রদ্ধা সম্মান সে সকল মানুষদের প্রতি ‘মহান মানুষ তাঁরা’।
কিছু হলেই রাষ্ট্রপ্রধানের দোষ
দোষ কী শুধু দেশের! দোষ আমাদের চরিত্রে।
দূর্নীতি যাদের রক্তে মেশা প্রমাণিত বহুবার
ঘর করেছে আড়ত মজুদ হয়েছে খাবার।
ফেসবুকে দেখি সেজেছে সবাই সাধু
করোনা নিয়ে ব্যবসা কারা করে প্রভু!
করোনাকে সত্যিই যদি ভয় করতো
জিনিসের দাম তবে কী বাড়তো,
মৃত্যুকে করে না ভয় লোভী অর্থে
জাতি একে অপরকে মারে নিজ স্বার্থে।
প্রভু উদ্ধার করো তুমি কঠিন বিপদে
জানিনা এর শেষ কী! মঙ্গল করো সবারে।
-৫
বাংলার কঠিন বিপদের দিনে আলী বাবা আসে
গ্রামীণ ব্যাংক ব্রাক ব্যাংক স্কয়ার বসুন্ধরা যমুনা-গ্রুপ
ওয়ালটন বড় বড় কোম্পানিগুলো কোথায় থাকে
এত এত ব্যাংক, এমপি, মন্ত্রী, মেয়র তাদের ভূমিকা কী
ফুটানি মারা যাকাত দাতা কোথায় তারা
শাড়ি লুঙ্গি বিলাতে যেয়ে মানুষ মারে যারা?
সত্য কাজে নয়তো রাজি
মিথ্যাকে করে পুঁজি সেজেছে সবাই হাজি,
যার আছে যত খাচ্ছে সে তত।
বাহ্ জাতি বাহ্! সেনাবাহিনী রয়েছে মোতায়েন
হবে লকডাউন এই শহরে
যাদের নাই ঘরে খাবার তারা কী খাবে?
যারা বাসা বাড়িতে খায় করে কাজ
করোনার কারণে তাদের না করে দিচ্ছে আজ
এই মানুষগুলোর কী হবে?
বললেই তোমরা বলবে আমি খারাপ
আমরা হয়েছি ঘরে বন্দি তার কারণ পাপ,
যতই করো তা না না খোদার মাইর
আমরা মানুষ মানুষ হলাম না,
পাপ করো না পাপ করো না
পাপের কারণেই আজ করোনা আমাদেরকে ছাড়ে না!
সবাই থাকুক ভালো সবাইকে নিয়ে
করোনা হোক দমন আমাদের সচেতনে,
ক্ষমা করো হে প্রভু দয়াময় কঠিন বিপদে
জানিনা এর শেষ কী! মঙ্গল করো সবারে।
-৬
যারা বলে এই দেশেতে খাবারের অভাবে
এখন আর মানুষ মরে না
নেই গরীব, ধনীদের সোনার বাংলা
চোখ থাকতে কানা তারা চোখে দেখে না
শুয়ে আছে রেলস্টেশনে কতো মানুষ
ক্ষুধায় শিশু কাঁদে
পেটের দায়ে কিশোরী বদলায় হাটে হাটে
তারা কি মানুষ না? তাদের খবর কেউ রাখে না।
কোন ধনী দেশে মন জন্ম নিয়েছ তুমি
বললেই কিছু তোমরা বলবে দোষী আমি।
চিন্তা ভাবনা খুবই খারাপ
শুধু অর্থে নয় স্বভাবে আমাদের অভাব।
এই দেশেতে জন্ম আমার গর্ব করে বলি
দেখে জাতির কর্মকাণ্ড লজ্জা পাই আমি।
দূর্নীতি যাদের রক্তে মেশা প্রমাণিত বহুবার
ঘর করেছে আড়ত মজুদ হয়েছে খাবার।
দেখলাম গিয়ে মিরপুর বিআরটিএ-তে
টাকা ছাড়া কাজ হয় না সহজে।
সার্জেন্ট খেলো ছয়শো টাকা, ছেড়ে দিলো চারটি বাইক
আইন দেখালো আইন মানলো না! কার হলো পাপ,
এ-টেবিল নয় ও-টেবিল আগামীকাল আসেন হবে না আজ।
ঘুষ ছাড়া, দালাল ছাড়া, হয় না সহজে সরকারি কোনো কাজ।
মেডিকেল, ডাক্তার নার্সদের কথা কী বলবো ওরে
স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালতে দূর্নীতি বাংলা জুড়ে,
ক্ষমা করো হে প্রভু দয়াময় জাতি মরি লোভে।