রবিবার, ৬ জুলাই, ২০২৫

কেমন কবিতার দেশ

 সবুজ বৃক্ষ ঘৃণা করে

মুখ ফিরিয়া নেয় অভিমানে,

পাখির সাথে কথা বলি

সে আমারে দেয় গালি,

জমিন ফাটিয়া আমারে বলে

অনেকেই পা চাটার দলে,

লজ্জিত কলমের কালি

কবিরা ক্যান বিক্রি হইলি!


সোনার বাংলা নেই ভালো

প্রতিবাদে তাই আকাশ লাল হইলো,

নাহি তা জানা গেলো

কি দুখে স্বাধীনতার মৃত্যু হলো,

কার বুকে কে গুলি করিলো

মেধাশূন্য ভুবন কাঁদিলো,

হায় হায় কি জানি শেষ

কেমন কবিতার দেশ!


বিচার চাইলে বিচার পাই না

চুরি হয়ে গেছে মায়ের সোনার গয়না,

থানায় গেলে মামলা নেয় না

কি অদ্ভুত স্বাধীন বাংলা,

ভেঙে গেছে ভাইয়ের স্বাধীনতার আয়না

লাঞ্চিত হওয়া বোনের বিচার পাই না,

এখন শুধু মনে পড়ে 'হীরক রাজার দেশে

যায় যদি যাক প্রাণ— হীরকের রাজা ভগবান!

এগুলোও একধরনের কবিতা

 *

আদৌ কি এই দেশে

সেনাবাহিনী আছে

নাকি তারাও টাকার কাছে

বিবেক বিক্রি করে বাঁচে

বিক্রি হয়ে গেছে?


*

আমি মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা করি

শ্রদ্ধা করি বঙ্গবন্ধুকে

শুধু শ্রদ্ধা আসে না তাদের প্রতি

যারা নেই সত্যের পক্ষে!


*

তুমি আমি আমরা তুমি

একই ভূমিতে জন্মাইয়াছি

কিভাবে করলে গুলি

পুলিশ বাহিনী?


*

গুজবে কেউ দিও না কান

কান হবে খান খান

তবে কান ধরে মারলে টান

গদিও যাবে যায়রে জান!


*

কারো মৃত্যু কামনা করা ভালো না

করো তাই দোয়া

শুনেছি রুহের হাক পৌঁছে যায়

পাক কালামে পাওয়া।


*

হিসাব কি আর সব

হাশরে নেয় রব

কিছু হিসাব নিকাশ

দুনিয়াতে হয় প্রকাশ।


*

ইতিহাস ঘুরিয়া ফিরিয়া আসে

আসিয়া তাহারই বক্ষে বসে

করিয়া ছিলা তুমি

পূর্বে যাহা ধরণীতে!


*

কোথাও কি বলিয়াছে কেউ

মুক্তিযোদ্ধারা বাংলার নয় কেউ

তাদের জন্য পেয়েছি দেশ

তারাই বলছে কোটার প্রয়োজন শেষ।


*

শিশুর মতো মুখটা তাহার

মাথায় ছিলো ঘুমটা

মুখে ছিলো মধুর বুলি

অহংকারে ভরা মনটা!


*

এতো আমল করিয়াও লানতের তক্তা গলায়

তবু করুণা করে গদি দিছিলো উপরওয়ালায়

সুযোগ দিয়া দেখছে তিঁনি যোগ্য ছিলে না তুমি!


*

বুক তো আমার মা-ও পাতে

আমি সে বুকে ঘুমাই মাথা রাখি

তুমি কিভাবে পারলে

ভাই হয়ে ভাইয়ের বুকে করতে গুলি?

ঐ বুকে বাংলাদেশ।

আগুন নেভাতে আগুন হতে হবে

 সারা শরীর করছে ব্যথা

মাথায় তিব্র যন্ত্রণা,

তবু বলছি এখন প্রেমের

কাব্য লেখার সময় না।

জ্বরে আমার চোখ জ্বলছে

যন্ত্রণায় আমার হৃদয় পুড়ছে,

তবু বলছি এখন প্রেমের

কাব্য লেখার সময় না।

মা বললেন 'শব্দ দিয়ে প্রতিবাদ করো

এখন বোবা থাকার সময় না,

তাই বলছি এখন প্রেমের

কাব্য লেখার সময় না।

তাই বলছি এখন প্রেমিকা নিয়ে

ঐ টিএসসির মোড়ে বসে—

পছন্দের চা খাওয়ার সময় না,

আর চুড়ি কিনে ঘরে ফিরে

গা ঘেষানো কাম-প্রেম বাসনা না,

এখন সময় প্রতিবাদ করার

বোবাদের জন্য দেশ প্রেম না।

বাংলার আকাশ প্রতিবাদে লাল

অনেকে হয়েছে শহিদ ষোলই জুলাই,

তাই বলছি এখন প্রেমের

কাব্য লেখার সময় না।

প্রিয় প্রেমিকারা তোমার বাবা বা ভাইকে বলো

তারাও যেন রাজপথে নেমে আসে,

সত্যিই যদি সোনার বাংলাকে ভালোবাসে।

“তিমির রাত্রি, মাতৃমন্ত্রী সান্ত্রীরা সাবধান!

যুগ-যুগান্ত সঞ্চিত ব্যথা ঘোষিয়াছে অভিযান!

কবি নজরুলে কয়,

তাই বলছি যুদ্ধে যাওয়ার সময় হয়েছে

এই আন্দোলন মিথ্যে নয়।

প্রিয় প্রেমিকা 'যদি সত্যি হয় ঐ আকাশ

যদি সত্যি হয় ঐ আকাশের চাঁদ,

যদি সত্যিই ভালোবাসো আমাকে বা তোমাকে

তবে আজই আসতে হবে নেমে রাজপথে।

এখানে বাংলার সূর্য সন্তানেরা লড়ছে—

অন্যায়ের বিরুদ্ধে,

এই আন্দোলন অযুত নিযুত ছাত্র ছাত্রীদের,

তারা স্বপ্ন দেখছে সুন্দর একটি সকালের—

এবং আঁধার পেরিয়ে নতুন সূর্য উঠবে,

সে আলোতে আগামী বাংলাদেশ হাসবে।

জ্বরে আমার চোখ জ্বলছে

যন্ত্রণায় আমার হৃদয় পুড়ছে,

তবু বলছি এখন প্রেমের

কাব্য লেখার সময় না।

আগুন নেভাতে আগুন হতে হবে,

আগুনে না পুড়লে সোনার মানুষ রবে?

সোনার অলঙ্কার যতই হোক খাঁটি—

তাকে পুড়িয়াই পরিচয় দিতে হয় সোনা নাকি মাটি,

তাই বলছি এখন প্রেমের

কাব্য লেখার সময় না,

সারা শরীর করছে ব্যথা

মাথায় তিব্র যন্ত্রণা।

দেখি নাই বায়ান্ন

দেখি নাই একাত্তর

দেখি নাই স্বৈরাচারের নয় বছরের শাসন

দেখি নাই পচাত্তর,

তবে কি দেখবো না চব্বিশের জয়?

কত আর ঝরবে প্রাণ

হবে বাঙালিরা ক্ষয়!

এই আন্দোলন মিথ্যে নয়

সত্যের হোক জয়।

এই দেশে গনতন্ত্র নেই

 প্রিয় প্রেমিকা,

আমাদের কথা ছিলো পরন্ত এক বিকেলে আকাশ দেখবো,

আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে আমরা হবো একে অপরের,

জুলাইয়ের এক গভীর রাতে আমাদের হবে মহা মিলন,

অথচ তুমি রাজপথে আর আমি কবরে!


প্রিয় প্রেমিকা,

ওরা আমাকে হত্যা করে জানিয়ে দিয়েছে—

এই দেশে গনতন্ত্র নেই,

অথচ আমি জানতাম স্বৈরশাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ!


প্রিয় প্রেমিকা,

রক্তে দাসত্ব মিশে গেলে সে শির কখনো মাথা উঁচু করে—

প্রতিবাদ করতে পারে না,

চাইতে পারে না ভাই হত্যার বিচার,

বোন লাঞ্চিত হওয়ার বিচার,

রক্তে দাসত্ব মিশে যাওয়া জাতি দাস ছাড়া আর কি হতে পারে?

জাতি মাইরা খ্যাতি চায়

 এক ছাগলে কত সাধুর করলো মুখোশ উন্মোচন,

তবু না হইলো রে সত্যবাদী মন।

সব শালারা এখনও নিজেরে দাবি করে সাধু,

চুরি হইয়া গেছে রে কৃষক আবুল ভাইয়ের কদু!

বড় গলায় কথা বলে নয়নের জলে,

জাতি মাইরা খ্যাতি চায়!

পা চাটা চামচারা রাজপথে বলে,

ওরাও আবার বড় গলায় ধমক মারে 'ওরাও বলে—

সবাই নাকি রাজাকার! দেশটা নাকি তার বাবার,

জাতি মাইরা খ্যাতি চায়!

আছে জাতি এক গোলকধাঁধায়,

যুদ্ধ করছে কার দাদায়? কার বাবায়?

এক ছাগলে কত সাধুর করলো মুখোশ উন্মোচন,

তবু না হইলো রে সত্যবাদী মন।

সোনার বাংলা ভালো নেই,

ভালো নেই জাতির সন্তানেরা, সবার মধ্যে এখন যন্ত্রণা!

আছে ভালো শুধু ওরা সাধুর মুখোশ পরলো যারা,

ওই ভন্ড, ওই দুর্নীতিবাজ, ওই পা চাটা দালালেরা,

ভালো আছে কোটি টাকার গাড়িতে চড়া মন্ত্রীরা,

শুধু ভালো নেই, ভালো নেই সাধারণ মানুষ যারা,

হায় 'স্বাধীন দেশে পরাধীন নাগরিক আমরা!

এক ছাগলে কত সাধুর করলো মুখোশ উন্মোচন,

তবু না হইলো রে সত্যবাদী মন।

তাই উঠেনি আজ রবি

 কত আর মুখ বুঝে সবি

এবার দেখা তোর প্রতিবাদী ছবি।

জালিমদের অত্যাচারে

কত জীবন যায় ঝরে,

আকাশ তাই লাল হয়ে

অভিমানে বলে

বাংলায় পা চাটা অনেক কবি!

এখন হলুদ সাংবাদিকে

এখন দুর্নীতিতে

ধর্মের লেবাস পরে

ভরে গেছে বাংলায় অনেক ধার্মিক,

ধর্মের দোহাই দিয়ে

লুফে নিতে চায় গদি!

কত আর মুখ বুঝে সবি

এবার দেখা তোর প্রতিবাদী ছবি।

এখন নয়নে আগুন জ্বলে

বুক শব্দ বোমা হয়ে কথা বলে

দাবাইয়া রাখতে চাইলে

শির হয় পারমাণবিক শক্তি,

কত আর মুখ বুঝে সবি

এবার দেখা তোর প্রতিবাদী ছবি।

শোকে আমার মায়ের বুক হয়েছে লাল!

দেখলাম প্রভাত কাল

তাই উঠেনি আজ রবি!

কত আর বোবা হয়ে থাকবি

কত আর দাস হয়ে বাঁচবি,

এবার দেখা তোর প্রতিবাদী ছবি।

বিজয়ের গান

 শুনিতেছি গান উড়িতেছে বিজয়ের নিশান

গাইতেছি হৃদয় দিয়ে বাংলা মায়ের শান ও মান,

সেই এক বেদানার ইতিহাস

মা আমার বীরাঙ্গনা বোন আমার ধর্ষিতা

ভাইয়ের বুকে গুলি, পিতা বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে জানে বিধাতা

দিয়ে তাজা প্রাণ এনেছে বাংলার মান

তাই আজ গাইতে পারি বিজয়ের গান।

সেই এক বেদনার ইতিহাস

২৫শে মার্চ রাতের আঁধারে

পাকিস্তানি সৈন্যরা গুলি চালায় বাঙালিদের উপরে,

রক্তে লাল বাংলার আসমান

তবু মুক্তিযোদ্ধারা ছাড়েনি স্বাধীনতার হাল

কৃষক শ্রমিক ছাত্র যুবক মূর্খ সূর্খ, কেউ ছেঁড়া কাপড় পরে

অনেকে আবার দিনের পর দিন না খেয়ে

১৬ই ডিসেম্বর এনেছে বিজয়ের পতাকা

এনেছে বাংলার স্বাধীনতা।

লজ্জা লাগে আজ হৃদয়ে পাই ব্যথা

ভুলে গেছে এই জাতি একাত্তরের কথা,

টাই কোর্ট পরে কলমের খোঁচায়

দুর্নীতিতে মগ্ন শিক্ষিত সমাজ হায়!

একাত্তরে মূর্খরা করেছিল বাংলা মাকে মুক্ত

আজ শিক্ষিত সমাজ দুর্নীতিতে হয়েছে যুক্ত!

বাংলা মায়ের সম্পদ পাচার করে বিদেশের মাটিতে

ভুলে সেই বেদনার ইতিহাস

কত সাধনার ফলে পাওয়া বাংলার স্বাধীনতা যে।

ভয় পেয়ো না

 আলো আসছে

আলো জ্বলছে

আলো হাসছে

আলো ডাকছে,

বন্ধু তুমি অন্ধকার দেখে—

ভয় পেয়ো না।

ওরা আমার মেধা কাইরা নিতে চায়

 বায়ান্নতে জীবন দিছে রফিক চব্বিশে জীবন দিছে কতজনে একি,

ইতিহাস ঘুরে-ফিরে আসে জানো নাকি?

কারবালার রক্ত বাংলার জমিনে,

দিয়েছে জীবন হয়েছে শহিদ নরপিশাচদের গুলিতে!

কোথায় বড় বড় কবি, লেখক, সেলেব্রিটি আর মানবতার ফেরিওয়ালারা?

আমার ভাই বোনদের রক্তে রঞ্জিত সোনার বাংলা।

ওরা কোটা দিয়ে ডুবাচ্ছে দেশ, হচ্ছে সোনার বাংলা শেষ

ওরা মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ভাঙিয়ে চলছে অনাদিকাল,

তাই বুঝি আজ বাংলার আকাশ প্রতিবাদে লাল!

ওরা ক্ষমতার জন্য অন্ধ হয়ে গেছে, মনুষ্যত্ববোধ বিক্রি করে খায়।

ওরা আমার মেধা কাইরা নিতে চায়!

জান দিয়ে মান কেনা বাংলাদেশ ভালো নেই,

নরপিশাচরা খামচে ধরেছে মেধাবীদের লাল সবুজের পতাকা।

অন্যায়ের কাছে ইমাম হোসাইন হয়নি নতো,

দিয়েছে জীবন থেকেছে সত্যের পক্ষে জানে বিশ্ব।

হে বাংলার সূর্য সন্তানেরা তোমাদেরই হবে জয়,

ভুলো না বায়ান্নর আন্দোলন একাত্তরের ইতিহাস

তোমরা ছাত্র সমাজ ভয়কে করো জয়, তোমাদের নেই ভয়।

কেমন কবিতার দেশ

 সবুজ বৃক্ষ ঘৃণা করে মুখ ফিরিয়া নেয় অভিমানে, পাখির সাথে কথা বলি সে আমারে দেয় গালি, জমিন ফাটিয়া আমারে বলে অনেকেই পা চাটার দলে, লজ্জিত কলমের ক...